সম্প্রতি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত নতুন গেজেটে ধর্মীয় শিক্ষক না দিয়ে সঙ্গীত শিক্ষক নিয়োগের বিধিমালাকে ‘ইসলামবিরোধী অ্যাজেন্ডা’ আখ্যায়িত করে সংবাদমাধ্যমে আজ যুক্তবিবৃতি দিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর আমীর আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব আল্লামা সাজেদুর রহমান। বিবৃতিতে তারা অবিলম্বে এই গেজেট বাতিল করে সঙ্গীত শিক্ষকের পরিবর্তে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের বিধিমালা করা না হলে গণ-আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
বিবৃতিতে তারা বলেন, ইসলামে বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ। তাছাড়া সঙ্গীত কোনো মৌলিক শিক্ষার অন্তর্ভুক্ত নয়। বাংলাদেশের মতো মুসলিম-অধ্যুষিত দেশে মুসলিম অভিভাবকদের মতামত না নিয়ে তাদের ছেলেমেয়েদের প্রাথমিক শিক্ষায় সঙ্গীত শিক্ষা চাপিয়ে দেয়ার অধিকার কোনো সরকারের নেই। অবিলম্বে এই গেজেট বাতিল করে প্রাথমিক স্তরে সঙ্গীত শিক্ষকের পরিবর্তে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের বিধিমালা করা না হলে আমরা দাবি আদায়ের জন্য প্রয়োজনে রাজপথে গণ-আন্দোলন গড়ে তুলব ইনশাআল্লাহ। মুসলিম শিশু-কিশোরদের ইসলামী মূল্যবোধ ও ঈমান রক্ষার প্রশ্নে আমরা বৃহত্তর ইসলামী জনতাকে সচেতন ও ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
তারা আরো বলেন, এলজিবিটি ও গানবাদ্য ঢুকিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলিম শিশু-কিশোরদের ইসলামী মূল্যবোধ থেকে দূরে রাখার ডি-ইসলামাইজেশন প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা পতিত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট আমল থেকেই ছিল। দুঃখজনকভাবে অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্বলতার সুযোগে সেই পুরনো ইসলামবিরোধী অ্যাজেন্ডাগুলো বাস্তবায়নে নেমেছে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চেপে বসা পাশ্চাত্যের উচ্ছিষ্টভোগী সুশীল কিছু এনজিওকর্মী।
তারা আরো বলেন, সকল ইসলামী দলের পক্ষ থেকে প্রাথমিক শিক্ষায় ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের দাবি অনেক পুরনো। সেটি উপেক্ষা করে উল্টো সঙ্গীত শিক্ষক নিয়োগের বিধিমালা একটি নিশ্চিত ইসলামবিরোধী পদক্ষেপ। তাছাড়া বাংলা, আরবী ও ইংরেজির মতো মৌলিক শিক্ষায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দুর্বল হচ্ছে, অনেক অভিভাবক এমন স্কুল থেকে ফিরিয়ে তাদের সন্তানদের মাদরাসায় ভর্তি করাচ্ছেন। এ নিয়ে কিছু সেক্যুলার মিডিয়া হা-হুতাশও করছে। আমরা সরকারের উচিত, প্রাথমিক স্তরে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগসহ মৌলিক শিক্ষার মান উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট দক্ষ ও যোগ্য শিক্ষক নিয়োগের সুব্যবস্থা করা।
নেতৃবৃন্দ বলেন, জুলাই গণ-আন্দোলনে অপাতিত মাদরাসা শিক্ষার্থী ও আলেম শহীদ হয়েছেন। ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের বিধিমালা করা হলে মাদরাসাশিক্ষকদের কর্মসংস্থান ঘটবে। দেশের দ্বীনদার-সাঈদ-উলামা, ইসলামী মূল্যবোধ ও রাসূল সা.-এর সম্মান যারা জীবন দেয়, তাদের অবদানের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি কিছু কর্মসূচী অবশ্যই সরকারের কাছে। আমরা আশা করি, সঙ্গীত শিক্ষকের পরিবর্তে সরকার অতিসত্বর প্রাথমিক স্তরে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের নতুন বিধিমালা করবে। আমরা চাই না আলেম-ওলামাদের সঙ্গে পূর্ববর্তী সরকারের কোনো সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি তৈরি হোক।
স্বাক্ষরক্রমে
মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী
যুগ্মমহাসচিব, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ